বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। এ যুগে অনলাইন বিজনেস এর ক্ষেত্রে তুমুল প্রতিযোগিতার মাঝে টিকে থাকতে হয়। এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে হলে আপনাকে অবশ্যই নতুন নতুন কৌশল শিখতে হবে। আশা করব এই পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে আসবে।
১) কোয়ান্টিটির চেয়ে কোয়ালিটির দিকে বেশি মনযোগী হতে হবে। আপনার ফেসবুক পেইজ/গ্রুপে লক্ষাধিক লাইক/ফলোয়ার থেকে কোনো লাভ নাই যদি তারা কেউ আপনার সাথে কানেক্টেড না থাকে কিংবা কেউ আপনার প্রোডাক্ট কিনে। লাইক, কমেন্ট, শেয়ার দিয়ে একটিভ থাকে, নিয়মিত প্রোডাক্ট কিনে, রিভিউ দেয় এমন ৫০০ জন মানুষ ইন-একটিভ ৫ লাখ ফলোয়ারের চেয়ে বেশি কার্যকর।
২) শুরুতেই সব বিষয়ে বিশাল জ্ঞানী না হয়ে নিজের আয়ত্তের যেকোনো নির্দিষ্ট একটি দিকে ফোকাসড হয়ে সে বিষয়ে সবার সেরা হওয়ার চেষ্টা করা উচিত। সব বিষয়ে অল্প অল্প জ্ঞানী হওয়ার চেয়ে যেকোনো একটাতে পারদর্শী হওয়া জরুরী।
৩) কম কথা বলা ও বেশি কথা শোনা! আপনার টার্গেট কাস্টমারদের বিভিন্ন পোস্ট, স্ট্যাটাস, কমেন্ট/রিপ্লাই ও তাদের অন্যান্য একটিভিটি দেখে তাদের পছন্দ-অপছন্দ, চাহিদা, আগ্রহ, কি কি বিষয় তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, সেসব ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে নিজের পণ্য/সেবার মানোন্নয়নে কাজ করলে ভালো ফল আসবে।
৪) ধৈর্য ধৈর্য ধৈর্য! এর কোনো বিকল্প নাই। কোনো টেকসই সফলতাই রাতারাতি আসে না। নিজের ব্যক্তিগত ও প্রোডাক্টের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য নিয়মিত সাহস ও সততার সাথে কাজ করতে হবে। প্রতিদিনের একটু একটু চেষ্টাতেই উদ্যোগের সফলতা আসবে।
৫) কোয়ালিটি কন্টেন্ট/প্রোডাক্টের কোনো বিকল্প নাই। প্রোডাক্ট ভালো হলে সন্তুষ্ট কাস্টমাররা তাদের স্ব স্ব কমিউনিটিতে শেয়ার করবে, তাদেরও আপনার সম্পর্কে রেফার করবে। এতে ১০ জন থেকে ক্রমান্বয়ে ১০*১০=১০০ জনের কাছে আপনি পৌঁছে যাবেন। এক্ষেত্রে ইমোশনালি কানেক্টিং স্টোরি টেলিং খুব গুরুত্বপূর্ণ।
৬) বাস্তবে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় যাদেরকে মানুষ ফলো করে, যাদের কথা মানুষ বিশ্বাস করে বা যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে তাদেরকে আপনার কাস্টমার বানানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। উল্লেখিত বেশ কয়েকজন ইনফ্লুয়েন্সার থেকে আপনার প্রোডাক্টের পজিটিভ রিভিউ আপনার উদ্যোগকে সমাজের অগণিত মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম।
৭) মানুষের জীবনে ভ্যালু এড করে, এমন সব বিষয়েও একটিভিটি থাকতে হবে। কেননা, আপনি যদি সারাক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ব্যবসায়িক পোস্ট দেন মানুষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে ও বিরক্ত হবে।
৮) কাস্টমারকে অবহেলা বা ইগনোর করা উচিত না। যে ই আপনার পেইজে বা গ্রুপে আপনার সাথে কথা বলতে চাইবে, তাদের সাথে যথাসম্ভব সুন্দর করে যোগাযোগ রক্ষা করা উচিত যাতে আপনার আচরণে মুগ্ধতায় কাস্টমারের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে।
৯) ফেসবুক পেইজ, গ্রুপে বা নিজের প্রোফাইলে পোস্ট দিয়ে হারিয়ে যাওয়া কিংবা মেসেজে রিপ্লাই না দিয়ে ভাব নেয়া পরিহার করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় উত্তর না পেলে কাস্টমার হারানো বা তাদের অন্যত্র চলে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। কেননা, আপনি যোগাযোগ রক্ষা না করলে/রিপ্লাই না দিলেও আরো অসংখ্য অপশন কাস্টমারের কাছেও আছে। তাই, নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখতে হবে।
১০) আপনাকেও অন্যদের সাথে কানেক্টেড থাকতে হবে, তাদের পোস্টে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার বা রিভিউ দিয়ে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নত রাখতে হবে। এতে আপনার পরিচয় বা প্রোডাক্টের কথা তাদেরও মনে থাকবে। আর, আপনি যদি একেবারেই কারো সাথে যোগাযোগ রক্ষা না করেন, তারাও এক সময় আপনাকে ভুলে যাবে।
আশা করি, উল্লেখিত প্রত্যেকটা টা পয়েন্ট আপনাদের অনেকের জন্য উপকারী হবে। বিশেষত যারা অনলাইনে নিজেদের ব্যবসা করছেন। অবশ্য, ব্যক্তিগত জীবনেও এসব প্রয়োজনীয়।
সবাইকে ধন্যবাদ।