Life Style

ডেলিভারি কোম্পানী, ডেলিভারি ম্যান, কাস্টমার সামন্য ভুল বুঝা-বুঝি_ ফলাফল কষ্ট

Blogger SM ALAMGIR

ডেলিভারি সর্ভিসের বিড়ম্বনা যেমন আছে সেখানে একটা কষ্টেরও গল্প আছে।সমাজের সব সেক্টরেই অনিয়ম দূর্নীতি আছে।ঢালাওভাবে তাই সবার উপর দোষ চাপানো ঠিক না।নিচের গল্পটাও তাই প্রমাণ করে_
গুলশান বাড্ডা লিংক রোড। গত পরশুদিন রাত ঠিক ১১.৩৫। অনেকদিন পর বৃষ্টি হয়ে চারিদিকে শান্ত পরিবেশ। সুন্দর এই পরিবেশে এক্টু হাঁটার জন্য বের হলাম। গেট থেকে বের হতেই ঐ ছেলেটিকে রাস্তার পাশে বসে থাকতে দেখলাম। ছেলেটাকে এভাবে বসে থাকতে দেখেই মায়া লেগে গেলো।
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পরছে। রাস্তা ঘাট একেবারে ফাঁকা। বেওয়ারিশ কুকুরে ঘুরাঘুরি আর থেমে থেমে পথিকের আসা যাওয়া যাওয়া ছাড়া নিস্তব্ধ এলাকা। আমার চোখ বারবার ছেলেটির দিকে ছুটে যায়। গেটে দাড়িয়ে কিছুক্ষণ তাকে অবলোকন করলাম। মায়া আরো বেড়ে গেলো। মনে হচ্ছিল সে কাউকে কল দিচ্ছে কিন্তু ধরছে না।
আমি হেটে গুদারা ঘাটের দিকে যেতে লাগলাম। কিন্তু ঐ ছেলের কথা ভুলতে পারছিলাম না। তাই ৬/৭ মিনিট পর ব্যাক করে তার কাছে আসলাম। ছেলেটি এখনো বসে আছে। কাছে গিয়ে সুন্দর করে জিজ্ঞেস করলাম ‘কোন সমস্যায় পরছো’?
কোন হেল্প লাগবে?
মুবাইলে টাকা নাই, কাউকে কল করতে হবে?
১৭/১৮ বছরের ছেলেটি লজ্জা পেয়ে গেলো। আমি লজ্জা ভাঙিয়ে বললাম ‘লজ্জার কিছুই নাই, বিপদ আপদ মানুষেরই হয়’। কোন সমস্যা থাকলে বলো, দেখি কিছু করতে পারি কিনা।
সে বললো: আসলে আমি এক্টা পার্সেল ডেলিভারি দিতে আসছে, এড্রেস এই আসে পাশেই। কিন্তু রিসিভার কল ধরছে না। থাকি মিরপুরে। আজ ডেলিভারি না দিলে কালকে আবার আসতে হবে, এছাড়া কম্পানিও আমাকে ঝাড়ি দিবে।
কম্পানিকে জানিয়েছো যে কল ধরছে না?
প্রথমে ভয়ে জানাইনি, এখন জানিয়েছি, ঝাড়ি মারছে আমারে, এখন কম্পানি কল দিচ্ছে কিনেতু কম্পানির কলও ধরছে না।
তো, অন্য নাম্বার দিয়ে কল দাও।
না, অন্য নাম্বার দিয়ে কল দেয়া কম্পানির নিষেধ আছে।
তো আমাকে নাম্বার দাও, আমি কল দিয়ে দেখি।
দিবে না। ভয়ে।
আশ্বাস দিয়ে বললাম ‘দাও, আমি সুন্দর করে কথা বলি, কোন সমস্যা করবে না।
পরে নাম্বার দিলো।
কল দিলাম।
কল ধরলো এক ম্যাডাম।
অনেক সুন্দর করে রিকোয়েস্টের সুরে বললাম ‘একটা ডেলিভারি এসে বৃষ্টির মধ্যে বসে আছে, আপনার যদি কোন সমস্যা না থাকে তাহলে প্লিজ ডেলিভারিটি রিসিভ করুন। ছোট্ট এক্টা ছেলে ভয় পেয়ে আছে।
ম্যাডামের অভিযোগ ‘ডেলিভারি ম্যান আসার কথা ছিল ১০ টার মধ্যে। এখন এত লেট করছে তাই আমি রিসিভ করতে চাচ্ছি না। বাসায় পুরুষ মানুষ নাই, ব্লা ব্লা বহুত কিছু। তারপরও বললাম ছোট ছেলে, সাইকেল নিয়ে ডেলিভারি দেয়, আবার বৃষ্টি হয়েছে, তাই এক্টু দেড়ি হয়েছে, দয়া করে রিসিভ করে ছেলেটিকে একটু সহযোগীতা করুন। ম্যাডাম রাজি হলেন। ছেলেটিকে গেটের সামেন যেতে বললো। ছেলেটিকে বিদায় দিয়ে আমি বাসায় চলে আসলাম।
আমার এক্টা জিনিস বেশ ভালো লাগে। আজ থেকে ১০/১২ বছর আগেও এই পাঠাও, উবার, ফুড ডেলিভারি, পার্সেল ডেলিভারি কালচার দেশে চালু ছিল না। এখন এই সেক্টরে শত শত ইয়াং ছেলে কাজ করছে, সবাই কত হাসিমুখে পরিশ্রম করে, নিজেকে সাপোর্ট দেয়, পরিবারকে সাপোর্ট দেয়। অনেক ভালো লাগে এই দৃশ্য দেখলে। আমার মনে হয় দেশের সবারই ভালো লাগে।
ভালো লাগার পাশাপাশি এই ছেলে মেয়েদের প্রতি সবাই আরেকটু সুহৃদ হলে ছেলেগুলি কাজে উৎসাহ পাবে। আরো ভালো করে কাজ করবে। আরো নতুন ছেলে মেয়ে এই লাইনে ঢুকবে। এক্টা সময় বড় একটি জিবীকার ক্ষেত্র হবে এই সেক্টর। তাই আসুন, সবাই এদের পাশে দাঁড়াই। এদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে এদের স্বপ্ন ভংগ না করি।
.
.
.

☑ সব শেষে আপনাকে বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি ,  আমাদের এই ছোট্ট উদ্যোগটি  আপনাদের যদি ভালো লাগে তবে সর্বদা আমাদের পাশে থেকে আমাদের সাহস বাড়াতে পোস্ট গুলোতে লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ার করে আমাদের কাজের স্পৃহা আরো বাড়িয়ে দিতে আপনারা বিশেষ ভূমিকা রাখবেন এবং সেই সাথে আপনার একটি শেয়ার হয়তো আপনার নিকটস্থ কারো জন্য একটি নতুন দরজা খুলে দিতে পারে । সেই আশা বাদ ব্যক্ত করে সবাইকে আবারো ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় নিচ্ছি।  আজ এ পর্যন্ত । সবাই ভালো থাকুন সুস্থ্য থাকুন। দেখা হবে পরবর্তী নতুন কোন আর্টিকেলে।  আল্লাহ হাফেজ।

.

.

.

আমাদের আরো পপুলার আর্টিকেল

 

Spoken English Course :

Model Test :

Health Tips :

Outsourcing/Online Income :

Fiverr Gig :

 

Notice Board :

Others Articls :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button