Education

ধর্মীয় সহিংসতা এখন চরম পর্যায় | আবেক নয়, বিবেককে প্রাধান্য দিন

SM ALAMGIR

মানুষের সব চেয়ে দুর্বল স্থান হলো তার নিজ নিজ ধর্ম। মানুষ তখন গর্জে উঠে যখন তার নিজ ধর্মের অবমাননা করা হয়। একজন মানুষ সেস্বায় কখনই অন্য ধর্মের অবমাননা করে না। কারণ সে নিজেও জানে, ধর্ম তার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কিছু  কুচক্রি মহল আছে যাদের কাজ হলো ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা। তার এটাও জানে যে, ধর্ম নিয়ে কোন সংঘাত সৃষ্টি হলে সেটা দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকে। এমনকি সেই সংঘাত যুগ-যুগান্তর অব্যহত থাকে।

অনেকের মুখে শুনা যায়, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবা ’। বাংলাদেশ প্রক্ষাপটে, এই কথাটি অধিকাংশ মুসলিম সম্প্রদায়ের লোক বেশি বলে। কারণ তারা (মুসলিম সম্প্রদায়) বেশির ভাগ সময় সনাতন ধর্ম বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বী বিভিন্ন উৎসবে অংশগ্রহণ করে। সনাতন ধর্ম  বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মুখ থেকে আমি এখনো পর্যন্ত  এই কথাটি শুনিনি।

একটু বিশ্লেষণে যাই- সনাতন ধর্মাবলম্বী/হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা উৎসবে অধিকাংশ মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন অংশগ্রহণ করে নাচ, গান, খাওয়া-দাওয়া এমনকি সকল কার্যক্রমে আনন্দ উপভোগ করে। এবং এটা অনেকটাই মনের ইচ্ছায় করে। এমন নয় তাকে জোর করে পূজামন্ডবে নিয়ে যাওয়া হয়। সে মনের আনন্দে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজার আনন্দ সমান তালে উপভোগ করে।

কিন্তু……………….  আপনি লক্ষ্য করুন, কোন সনাতন ধর্মাবলম্বী/হিন্দু সম্প্রদায়ের কোন লোক মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে হজ্ব, জুম্মার নামাজ, রোজা, কুরবানী ঈদের জামাতের অংশগ্রহণ করেনা। একজন মুসলিম হজ্ব ও ঈদের জামাতের মাধ্যমে যে প্রকৃত আনন্দ খুঁজে পায়, তা আর কোনটাতেই পায় না। এই সমস্ত উৎসবে সনাতন ধর্মাবলম্বী বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর কেউ অংশগ্রহন করে না।

পবিত্র কুরআনের স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে- ধর্ম  নিয়ে যেন বাড়াবাড়ি করা না হয়।  ইসলাম ধর্মের মহামানব হযরত মুহাম্মদ (স) অন্য ধর্মের প্রতি কখনই অসম্মান করেননি। ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা যাবে না বলে অনেক জায়গায় কঠিন হুশিয়ার দেওয়া হয়েছে।

পবিত্র কুরআনের  সূরা আল মায়িদায় বলা হয়েছে, ‘হে কিতাবধারী! নিজেদের ধর্ম নিয়ে অযথা বাড়াবাড়ি করো না। আর (ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করে) তোমাদের আগে যারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হয়ে ও অন্যদের পথভ্রষ্ট করে সহজ-সরল পথচু্যত হয়েছে, তাদের পথ অবলম্বন করো না।’ (আয়াত: ৭৭)

পবিত্র কুরআনের সূরা হুদের ১১২ ও ১১৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে রাসুল! আপনাকে দ্বীনের পথে যেভাবে অবিচল থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আপনি সেভাবে অটল থাকুন। যারা তওবা করে আপনার সঙ্গে রয়েছে এবং ধর্মের বেষ্টনি থেকে বিন্দুমাত্রও দূরে সরে যায়নি, তারাও অবিচল থাকুক। নিঃসন্দেহে আলস্নাহতায়ালা তোমাদের সমস্ত কর্ম পর্যবেক্ষণ করেন। যারা জুলুম করে, তাদের পথে আকৃষ্ট হয়ো না। তোমরা তাদের প্রতি ঝুঁকিও না। না হয় তোমাদের জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে। আলস্নাহ ছাড়া তোমাদের কোনো বন্ধু নেই। আর তোমাদের তখন কোনো সাহায্যও করা হবে না।’

 

একজন প্রকৃত মুসলমানের পক্ষে মন্দির ভাঙ্গা তো দূরের কথা মন্দির ভাঙ্গার চিন্তা করাও সম্ভব নয়। কারণ, ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘যারা মানুষকে সাম্প্রদায়িকতার দিকে ডাকে, সাম্প্রদায়িকতার জন্য যুদ্ধ করে, সংগ্রাম করে এবং জীবন উৎসর্গ করে তারা আমাদের দলভুক্ত নয়। ’ -সুনানে আবু দাউদ : ৫১২৩

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলমান যদি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অধিকার ক্ষুন্ন করে কিংবা তাদের ওপর জুলুম করে, তবে কেয়ামতের দিন আমি মুহাম্মদ ওই মুসলমানের বিরুদ্ধে আল্লাহর আদালতে লড়াই করব। ’ –সুনানে আবু দাউদ : ৩০৫২

তিনি (সা.) আরও বলেছেন, ‘অন্যায়ভাবে কোনো অমুসলিমকে হত্যাকারী জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। অথচ চল্লিশ বছরের রাস্তার দূরত্ব থেকেই ওই ঘ্রাণ পাওয়া যাবে। ’ –সহিহ বোখারি : ৩১৬৬

অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো অমুসলিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করবে আল্লাহতায়ালা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন। ’ -সুনানে নাসাঈ : ৪৭৪৭

রাসূলুল্লাহ (সা.) ও খোলাফায়ে রাশেদিনের চিরাচরিত নিয়ম ছিল, যখন কোনো সেনাবাহিনী প্রেরণ করার প্রয়োজন হতো, তখন যুদ্ধ সম্পর্কিত বিভিন্ন নসিহত, দিকনির্দেশনার পাশাপাশি একথা অবশ্যই বলে দিতেন যে, ‘যুদ্ধকালীন সময়ে বা যুদ্ধের পর কোনো মন্দির-গীর্জা-উপাসনালয় ভেঙে ফেলবে না। ’ -মুসান্নাফ আবি শায়বা : ৩৩৮০৪

 

সনাতন ধর্মাবলম্বী/হিন্দু সম্প্রদায়ের কোন লোকের মধ্যে যদি সামন্যতম ধর্মের অনুভুতি থাকে, তাহলে সে কখনই পবিত্র কুরআনকে তার পূজায় রাখবে না। আর কোন মুসলমান লোকের মধ্যে যদি সামন্য তম ঈমান থাকে, তাহলে সে কখনই পবিত্র কুরআন পূজায় রাখবে না।

সুতরাং এটাই বুঝা যাচ্ছে, কুমিল্লার ঘটনাটি একটি কুচক্র মহলের লোকজন করেছে। তাদের চিন্তা-ভাবনা ছিল একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করা। অবশেষে এতটুকুই বলবো- আবেক নয়, বিবেককে প্রাধান্য দিন। দেখবেন সব সমাধান হয়ে যাবে। ইনশা আল্লাহ।

.

.

☑ সব শেষে আপনাকে বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি ,  আমাদের এই ছোট্ট উদ্যোগটি  আপনাদের যদি ভালো লাগে তবে সর্বদা আমাদের পাশে থেকে আমাদের সাহস বাড়াতে পোস্ট গুলোতে লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ার করে আমাদের কাজের স্পৃহা আরো বাড়িয়ে দিতে আপনারা বিশেষ ভূমিকা রাখবেন এবং সেই সাথে আপনার একটি শেয়ার হয়তো আপনার নিকটস্থ কারো জন্য একটি নতুন দরজা খুলে দিতে পারে । সেই আশা বাদ ব্যক্ত করে সবাইকে আবারো ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় নিচ্ছি।  আজ এ পর্যন্ত । দেখা হবে পরবর্তী নতুন কোন আর্টিকেলে ততক্ষনে  সবাই ভালো থাকুন সুস্থ্য থাকুন। ।  আল্লাহ হাফেজ।

.

.

.

.

আমাদের আরো পপুলার আর্টিকেল

 

Spoken English Course :

Model Test :

Health Tips :

Outsourcing/Online Income :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button