বিজয় দিবস
উদয়ের পথে শুনি কার বাণী,
“ভয় নাই, ওরে ভয় নাই।
নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই, তার ক্ষয় নাই।”
.
প্রতিদিন ভোরে যে নতুন সূর্যটি এই বাংলার নদী মাঠ তেপান্তর ছুয়ে তার আলোকরশ্মি বিলিয়ে দেয় আমাদের বুকে, আমাদের মনে, আমাদের মেধায়, আমাদের মগজে। সেই সূর্যটি একদিনে অর্জিত হয়নি। সেই সূর্যটি একদিনে এই বাংলার বুক চিরে উঠেনি। এর জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে হাজার বছর ।
.
বাঙালি জাতি স্বাধীনতার জন্য মানবমনের আকাঙ্খিত স্বাধীনতাকে অর্জন করার জন্য ব্যাকুল ছিল । বাংলার এই স্বাধীনতার সূর্য বাঙালির হাতে তুলে দিয়েছিল ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে । যে কারণে 16 ই ডিসেম্বর আমাদের জন্য অনেক বড় একটা দিন। যে কারণে আজকে এই দিনে আমি নির্দ্বিধায় বুক ফুলিয়ে বলতে পারি আমার বিজয় দিবস, আমার বাংলাদেশ, আমার স্বাধীনতা।
.
এই স্বাধীনতা অর্জন করার জন্য দীর্ঘ নয় মাস আমাদেরকে সহ্য করতে হয়েছে কঠিন খাণ্ডবদাহন । স্বাধীনতার এই সূর্যটিকে অর্জন করার জন্য দিতে হয়েছে 30 লক্ষ শহীদের রক্ত। সম্ভ্রম হারিয়েছেন 2 লক্ষ মা-বোন । যে বাংলা ভাষায় আজকে আমি এই মুখের কথাগুলো বলছি বাংলা ভাষাকে অর্জন করার জন্যও আমাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে হয়েছে পিচ গলা রাজপথে।
.
.
বিজয় দিবস বাংলাদেশের একটি বিশেষ দিন হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের জনগন সর্বত্র পালন করা হয়। প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে দিনটি বিশেষভাবে পালিত হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারীভাবে এ দিনটিতে ছুটি (বন্ধ) ঘোষণা করা হয়।
দীর্ঘ নয়টি মাস যুদ্ধের পর ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়অহিয়া খান পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার লেঃ জেনারেল নিয়াজীর নিকট পত্রে যুদ্ধ বন্ধ এবং আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেন।
.
.
তদানুযায়ী ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রমনা রেসকোর্স ময়দানে বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ও ভারতের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর কাছে পাকিস্তানী বাহিনীর প্রায় ৯১,৬৩৪ (অনেকের মতে ৯৩,০০০) সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। এর মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
.
.
হাজারও ছোট ছোট বাচ্চার মুখে ফুটেছে হাসি। হৃদয়ে ধরেছে লাল-সবুজের পতাকা। আজও তার ধারাবাহিকতা বিজয় দিবস বাংলাদেশের একটি বিশেষ দিন হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের জনগন সর্বত্র পালন করা হয়। প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে দিনটি বিশেষভাবে পালিত হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়।
.
এই উপলক্ষে বাংলাদেশে প্রতি বছর দিবসটি যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য এবং বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে পালিত হয়। ১৬ ডিসেম্বর ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের সূচনা ঘটে।
.
.
জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে অনুষ্ঠিত সম্মিলিত সামরিক কুচকাওয়াজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যরা যোগ দেন। কুচকাওয়াজের অংশ হিসেবে সালাম গ্রহণ করেন দেশটির প্রধান রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী।
.
.
এই কুচকাওয়াজ দেখার জন্য প্রচুরসংখ্যক মানুষ জড়ো হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে ঢাকার সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ দলবল নির্বিশেষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
.
.
ধন্যবাদ সবাইকে