Islamic

Heart Touching Real Short Story _ By SM ALAMGIR

কে সেই মহিয়সী, যিনি এমন পবিত্র ফুলের জন্ম দিয়েছেন

কে সেই মহিয়সী, যিনি এমন পবিত্র ফুলের জন্ম দিয়েছেন

প্রতিটি লেখার মধ্যে সুন্দর সুন্দর মেসেস দেওয়া থাকে। কিন্তু অনেকেই সেটা বুঝে না। ঠিক তেমনি একটি লেখা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশা করি এই লেখাটি আপনার মন কেড়ে নিবে।

 

প্রতি শুক্রবারে মতো এবারও জুমআর সালাত পড়তে এসেছি। বাসা থেকে অজু  করে না আসায় অজু করা জন্য অজুখানায় প্রবেশ করি।  অজুখানায়  ঢুকে দেখি একটা বাচ্চা পানির কল ছেড়ে কি যেন করছে। ভাবলাম, হয়তো পানি নিয়ে খেলা করছে।  এই বয়সের বাচ্চারা সুন্দর কিছু দেখলে খেলায় মেতে ওঠে। (sm alamgir / sm alamgir )

কিন্তু কাছে গিয়ে দেখি সে খেলা করছে না, সে পানি দিয়ে ওযু করছে! প্রথম দেখাতে অবাক হলাম। গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন করলাম,  হাত ধোয়ার সময় বলছে, এক… দুই… তিন…। এভাবে তিনবার করে নিজের ছোট্ট ছোট্ট আঙুল দিয়ে হাত-পা ধৌত করছে। এসব দেখে নিজের মধ্যে অনরকম পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।

তার  একদম কাছে গিয়ে  বললাম,  তোমার না কি ? সে খুব সুন্দর ভাবে বললো- আমার নাম জাকারিয়া। নাম বলেই রুমাল দিয়ে মুখ মুছতে লাগলো। আমি বললাম-  মাশা আল্লাহ, তুমি তো ভালোই ওযু করতে জানো দেখি!

আমার কথা শুনে ভাঙা ভাঙা কন্ঠে সে যা বলল তা ছিল এমন—’ওযু করা এক্কেবারে সহজ। এতে আমার কখনো কোন অসুবিধা হয় না । অসুবিধা হয় নামাজে দাঁড়াতে গেলে……….!!!!!!!

কথাটা শুনে একটু অবাক হলাম। ভালো করে তার পায়ের দিকে লক্ষ্য করলাম। আমি ভাবলাম , তার পায়ে হয়তো কোন সমস্যা আছে কিনা। তা কোন কিছুই দেখতে পেলাম না। দেখলাম সব ঠিক আছে।

(sm alamgir / sm alamgir )

আমি জিজ্ঞাসা করলাম- নামাজে দাঁড়াতে তোমার কি অসুবিধা হয় ? ছেলেটি মাথা নিচু করে বিনয়ের সাথে বলল-  ছোট বলে সবাই আমাকে পেছনের কাতারে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু আমি তো অন্যদের মতো দুষ্টুমি করি না। তখন বরং ওদের দুষ্টুমির কারণে আমিও নামাজ পড়তে পারি না ঠিকমতো।’

কথা শুনে আমি তার থুঁতনিতে আমার হাত দিয়ে একটু উচু করে দেখলাম, তার চোখ ছলছল করছে। মনে হলো শীতের সকালে ঘাসের উপর শিশির ন্যায় হাজারো শিশির কণা তার চোখে জমা হয়েছে।

 

আমি তার মনে সাহস দেওয়ার জন্য বললাম-  ‘তোমার আব্বুর সাথে নামাজে দাঁড়াবে। তাহলে কেউ তোমাকে পেছনে ঠেলে পাঠাবে না।’

(sm alamgir / sm alamgir )

ছোট ছেলেটি  মাথা নিচু করে কান্না জড়িত কন্ঠে বলল, ‘আমার  আব্বু মারা গেছেন। কথাটি শুনে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। অনেকটা বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। আমি কিছু বলতে পারছিলাম না, শুধু বাচ্চাটির দিকে তাকিয়ে ছিলাম।

ছোট ছেলেটি আমার দিকে তাকিয়ে  হাজারো দুঃখ বুকে চাপিয়ে মৃদু হাসির ছলে বলল-  প্রতিবেলা নামাজের সময় হলে আম্মু আমাকে মসজিদে পাঠিয়ে দেন। আর বলে দেন, আব্বুর সাথে দেখা করতে চাইলে, নামাজ পড়ে তার জন্য দুআ করো। তাহলে খুব তাড়াতাড়ি তোমার আব্বুর সাথে সুন্দর একটা জায়গায় তোমার দেখা হবে।’

কথাটা শুনে মনের অজান্তেই আমার চোখের কোনে একফোটা জল এসে, আমার গালের উপর দিয়ে নিচের দিকে গড়িয়ে পড়ে যাওয়ার অনুমতি চাচ্ছে। আমি তখনও বাকরুদ্ধ অবস্থায় ছিলাম। কোন কথায় বলতে পারছিলাম না। চোখের জল আমার অনুমতি অপেক্ষা না করে অঝড় ধারায় ঝড়তে লাগলো। আকাশের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে মনটা হালকা করার চেষ্টা করতেছিলাম। কিছুক্ষন পর একটি সালামের আওয়াজ শুনতে পায়, নিচের দিকে তাকিয়ে দেখি ছোট্ট বাচ্চাটি আমাকে সালাম দিয়ে মসজিদের দরজার দিকে চলে যাচ্ছে……………….

.

এটি কোনো গল্প নয়, বাস্তব ঘটনা। জানি না কে সেই মহিয়সী, যিনি এমন পবিত্র ফুলের জন্ম দিয়েছেন। সালাম তাকে।

(sm alamgir / sm alamgir )

লেখাটি পড়ে আপনার কেমন লাগলো, অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এবং যদি ভালো লাগে তাহলে লেখাটি শেয়ার করে সবাইকে দেখার বা পড়ার সুযোগ করে দিন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

.

আমাদের আরো পপুলার আর্টিকেল

2 Comments

  1. লেখাটি পড়ে কখন যে চোখের কোনে শিশির জমে গেল বুঝতেই পারিনি। হে আল্লাহ তুমি এই পিতৃহারা বাচ্চাটির মনের বাসনা পূর্ণ করে দাও। তাঁর ইবাদতের মাধ্যমে তার বাবার সাথে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দিও। এমন মহীয়সী মায়ের তুলনা হয় না। হে আল্লাহ তুমি এই মহীয়সী নারীকে নেক হায়াত দান করুন ।‌আমীন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button